Whatsapp বাংলা গল্প.. রিতুর কাহিনী

Tuhina Parveen (Rakhi)   2019-07-20   Student   WhatsappStory > Ritur-khahini   2049 Share

অনিকের পেনসিলটা হাত ফস্কে রিতুর কোলে এসে পরলো। অনিক তখন রিতুর নাম জানে না। অনিক কিছুক্ষন চুপ থাকার পর পাশের জনকে নামটা জিঞ্জাসা করলো, রিতু কিন্তু সব কিছু লক্ষ্য করছে তবুও চুপ, এবার অনিক রিতুর নাম ধরে ডেকে বলল এই রিতু পেনসিলটা দেনা plz..। সেদিন থেকেই রিতু আর অনিকের বন্ধুত শুরু ধীরে ধীরে বন্ধুত বাড়তে লাগলো। রোজ স্কুল, টিউশন। একদিন অনিক দেখলাম কি লিখে দিল আমার খাতায়, বাড়ি এসে দেখলাম ওর মোবাইল নং..আমি বেশ খুশি হলাম। ভাবলাম ওকে একটা কল দিই। আমি দিদির ফোনটা থেকে কল দিলাম। ওপাশ থেকে অনিক বলছে কে? আমি রে...আমি..অনিক বুঝতে পেরেছে রিতু..এইভাবেই চলছিল..উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট বার হল.. দুই জনের আলাদা আলাদা কলেজ ..তবুও বন্ধুত্ব আগের মতই আছে...রিতু ভাবতো তাদের বন্ধুত্ব যেনো চিরঅমর ..প্রতি বছরের মতো এ বছরও অনিক রিতুকে নিমন্ত্রন্ করেছে ওদের কালী পূজোয়..কিন্তু রিতুর যাওয়া হয় না....এবার রিতু ঠিক করেছে অনিকের বাড়ি যাবে...মার একটু অমত তাও রিতু যাবে, আজ রিতু খুব সেজেছে, অনিকের বাড়ি যাবে যে..অচেনা গ্রাম,অচেনা পরিবেশ কেমন একটা কিন্তু কিন্তু ভাব রিতুর. রিতু যে মুসলিম তাই হয়তো একটু বেশি ভাবছে রিতু. অনিকের বাড়ির লোকজন খুব ভালো। সেদিন রিতুর ভালোই লেগেছিল রিতুর। এইভাবেই চলছিল..একদিন রিতু টিউশন থেকে বাড়ি আসছে..বাসে বসে আছে রিতু..অনিকের sms। কি সব লিখে পাঠাচ্ছে, রিতু খুব বিরক্ত আজ বুঝতে পারছে না কেনো এইসব smsপাঠাচ্ছে অনিক, রিতু ভাবলো বাড়ি যায় .ফোনে আচ্ছা মতন দেবো।রিতু বাড়ি এসেই ফোন দিল সেই একই আচরন,এবার রিতু রেগে গেলো। ফোনটা কেটে দিল। কিছুদিন পর রিতু জানতে পারলো অনিক চাকরি পেয়েছে,খুব ভালো একটা চাকরি পেয়েছে। রিতু সেদিন খুব খুশি। অনিক চাকরি পাওয়ার পর কেমন যেন বদলাতে শুরু করল,এখন খুব একটা ফোন করে না রিতুকে, WhatsApp e সেই ভাবে chat করে না। ব্যস্ততা দেখায় অনিক রিতুকে, রিতু অনিককে কিছু বলে না.ওর কষ্ট হলেও বলে না। এইভাবে রিতু আর অনিকের মধ্যে দূরত্ব বেরেই চললো। অনেকদিন পর অনিক কল করেছে রিতুকে, তবে কল টা রিতুর জন্য নয়। শুভর ফোন নং নেওয়ার জন্য। রিতু এবার বলেই দিল, কি রে! অনিক কলটা নং নেওয়ার জন্য করেছিস? এ কি শুনলো রিতু অনিকের মুখে...হা! এই একটা শব্দেই রিতু সব বুঝে গিয়েছিল সেদিন...হা অনিক বদলে গেছে, এখন আর রিতুকে তার মনে নেই, সব কিছু ভুলে গেছে।সেদিন রিতু যেনো নিজেকেই চিনতে পারছিল না। এই কি সেই অনিক যাকে একবার কল দেওয়া মাত্রই ফোন করতো সেকিনা আজ নিজের প্রয়োজনে ফোন করেছে। সেদিনের পর থেকে রিতু আর অনিককে কল করেনি, অনিকের সব কিছু রিতু মুছে দিয়েছে, তবে মন থেকে পারেনি। অনেকদিন কেটে গেছে রিতু আর অনিকের কথা ভাবে না। তবে আজ হঠাৎ কি হলো রিতুর ঝাপসা দেখছে যে, না চাইতেও চোখ দিয়ে নদীর স্ত্রোত বয়ে যাচ্ছে, আজ অনিকের বিয়ে, যে fb তে দিয়েছে ওর বিয়ের সব ছবি। জানতে পারলাম রিতু ছাড়া সবাইকে বলেছে. সেদিন রিতু জানলো অনিকটা কত বেইমান।তাও রিতু মনে মনে ওদের ভালোই চাইলো। অনেকদিন ধরে রিতুর শরীরটা ভালো নেই। খুব দূর্বল হয়ে পরেছে রিতু। চোখটা লেগেছে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল, কষ্ট করে ফোনটা ধরলো রিতু।গলাটা চেনা চেনা লাগছে যে, হা অনিক ফোন করেছে, চিনতে অসুবিধে হল না তাও রিতু অনিক না চেনার ভান করছে, ওপাশ থেকে অনিক বলছে কি রে তুই আমার গলাটাও ভুলে গেছিস, রিতু মনে মনে ভাবছে তুই তো আমাকেই ভুলে গেছিস আর আমিতো শুধু তোর গলাটা না চেনার ভান করছি তাতেই তোর খারাপ লাগলো, ভাব তো আমাকেই ভুলে গেছিস আমার কত খারাপ লেগেছে।ভাবা বন্ধ করে রিতু এবার হাসলো, অনিকের বললো কি রে বিয়েতে বলিস নি বলে কি তোর বউ র ছবিও দেখাবি না।যা শুনলো রিতু, আরও ভেঙে পরলো।সতি অনিক কি ভাবে, ও তো বিয়েটাই অস্বিকার করছে, সব নাকি সাজানো..এই সব মিথ্যে। আর রিতু কিছু বললো না। কথায় আজ রিতু ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। রিতু বুঝতে পারলো ও মানুষ চিনতে ভুল করেছে।ফোনটা কেটে দিল। এবার বালিশটা নিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করলো, ঘুমানোর চেষ্টাই......।

....রিতুর কাহিনী By তুহিনা পারভীন (রাখী)

""রাগী মানুষ গুলো রাগের জন্যই - জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ন জিনিস হারিয়ে ফেলে""


""- মাঝ রাতে কান্না করা মানুষ গুলো - কখনো স্বার্থপর হয় না""