আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম)

Rumman Ansari   Software Engineer   2023-05-28   1377 Share
☰ Table of Contents

Table of Content:


মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন দুনিয়ায়

ঈসায়ী ৫৭১ সনের এপ্রিল মাসে তথা রবিউল আউয়াল মাসে মুহাম্মদ সা. কাবার মুতাওয়াল্লী আবদুল মুত্তালিবের বাস গৃহে ভূমিষ্ট হন। তাঁর আব্বা আবদুল্লাহ ইতিপূর্বে মারা যান। আম্মা আমিনা শিশুপুত্রকে নিয়ে শ্বশুর আবদুল মুত্তালিবের ঘরে বসবাস করতে থাকেন।

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মসনে আবরাহার অভিযান

ইয়ামেনের খৃষ্টান বাদশাহ আবরাহ রাজধানী সানা শহরে একটি বিরাট গীর্জা নির্মাণ করে। অতঃপর সে আরবদের হজ অনুষ্ঠান কাবা থেকে এই গীর্জায় স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই উদ্দেশ্য সে কাবা ধ্বংস করার জন্য ৬০ হাজার সৈন্য নিয়ে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়। তার বাহিনীতে বেশ কিছু হাতীও ছিলো। এটা ছিলো ৫৭১ খৃষ্টাব্দের ঘটনা।

কাবার মুতাওয়াল্লী আবদুল মুত্তালিব আছছিফাহ নামক স্থানে আবরাহার সংগে সাক্ষাৎ করে তাকে ধন- সম্পদ নিয়ে দেশে ফিরে যাবার অনুরোধ জানান। আবরাহ কাবা ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করে। আবদুল মুত্তালিব কুরাইশদেরকে পাহাড়ী অঞ্চলে চলে যান।

আবরাহা অগ্রসর হলো মক্কার দিকে। মিনা ও মুজদালিফার মধ্যবর্তী মুহাসসির নামক স্থানে তার বাহিনী পৌছলে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে তাদের উপর বৃষ্টির মতো পাথর খন্ড ফেলতে লাগলো।

এবং তিনি তাদের উপর পাথর খন্ড নিক্ষেপ করছিলো। ফলে তাদের অবস্থা হলো চিবানো ভূষির মতো। (সূরা আল-ফিলঃ ৩-৫)

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাল্যজীবন

সুয়াইবাহ নামক এক মহিলা হন শিশু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রথম দুধ-মা। পরে হালীমাহ আস সাদীয়াহ শিশু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে এলেন চির স্বাধীন মরু বেদুইনদের মাঝে। ছয় বছর বয়সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এলেন তাঁর আম্মার কাছে। আম্মা তাঁকে নিয়ে ইয়াসরিব যান।

স্বামীর কবর দেখা ও আত্মীয় বাড়ীতে প্রায় মাস খানেক থাকার পর আমিনা পুত্রকে নিয়ে মক্কার দিকে রওয়ানা হন। আবওয়া নামক স্থানে আমিনা মৃত্যু বরণ করেন।

দাসী উম্মু আইমান মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মক্কায় নিয়ে আসেন। দাদা আবদুল মুত্তালিবের স্নেহ ছায়ায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালিত হতে থাকেন।

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স যখন আট, তখন দাদা আবদুল মুত্তালিবও মারা যান। এবার চাচা আবু তালিব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই সময় আযইয়াদ উপত্যাকায় মুক্ত আকাশের নীচে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেষ চরাতেন। বারো বছর বয়সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাচা আবু তালিবের সংগে সিরিয়া সফর করেন।

যুদ্ধের ময়দানে যুবক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স তখন ১৫ বছর। কুরাইশ ও কাইস গোত্রের মাঝে পুরানো শত্রুতার কারণে যুদ্ধ বাঁধে। এই যুদ্ধে কুরাইশগণ ন্যায়ের উপর ছিলো। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরাইশদের পক্ষে যুদ্ধে যান। কিন্তু তিনি কারো প্রতি আঘাত হানেননি। যুদ্ধে কুরাইশরা জয়ী হয়। এই যুদ্ধেরই নাম ফিজারের যুদ্ধ।

হিলফুল ফুজুল

যুদ্ধ ছিলো আরবদের নেশা। শত শত পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো। মানুষের কোন নিরাপত্তা ছিলো না। সবাই আতংকের মধ্যে দিন কাটাতো। আয যুবাইর ইবনু আবদিল মুত্তালিব ছিলেন একজন কল্যাণকামী ব্যক্তি। তিনি এই অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে মত বিনিময় করেন। অনুকুল সাড়াও পেলেন। শিগগিরই গড়ে উঠলো একটি সংগঠন। নাম তার হিলফুল ফুদুল। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স তখন সতের বছর। তিনি সানন্দে এই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত হন।

হিলফুল ফুজুলের পাঁচ দফা

১। আমরা দেশ থেকে অশান্তি দূর করবো।

২। পথিকের জান-মালের হিফাজাত করবো।

৩। অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করবো।

৪। মাযলুমের সাহায্য করবো।

৫। কোন যালিমকে মক্কায় আশ্রয় দেবো না ।

Caption: নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম)