সন্তান, মা ও বাস্তব পরিস্থিতি

Tuhina Parveen (Rakhi)   2018-06-19   Student   WhatsappStory > Sontan-maa-o bastob-poristhiti   1699 Share
whatsapp bengali story

রিনা-বিনার আজ  সকাল থেকে কি হয়েছে ওদের কে জানে। দুইবোনই আজ কেমন যেনো অবাক হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। ভালো বোঝার ক্ষমতা হয়নি ওদের, কি করেই বা হবে একজনের আট আর একজনতো কথা বলতে শিখেছে মাত্র। রিনা যদিও কিছুটা বুঝতে পারছে। দুজনেই খুঁটিটা ধরে দাড়িয়ে আছে, আর ওদের মাকে দেখছে।

কি সুন্দর লাগছে ওদের মাকে, আগে কখনো ওদের মাকে এতো সুন্দর সাজতে দেখেনি ওরা। রিনা তখনো ভাবছে মা কোনো এত সেজেছে, পাশ থেকে বিনা ওর দিদি রিনাকে বলছে দেখনা দিদি মা কি সুন্দর সেজেছে, মা আমাদেরকে নিয়ে নতুন জায়গায় বেড়াতে যাবে বল। কত কি ভাবছে বিনা কি মজা হবে, ওরা বেড়াতে যাবে। রিনা কিন্তু কিছু বলছে না, ও শুধু দেখছে। সবার কি আনন্দ, কি হইচই বাড়িতে আজ। কতজন কতরকমের কথা মুখে, ভালোই হয়েছে, যাক বাপু মেয়েটার এতদিনে হিল্লে একটা হল, মা বাপ এতোদিনে শান্তি পেলো। সবই শুনছে রিনা। তখনই পাশ থেকে কে জেনো বলে উঠল, মালাটা তাড়াতাড়ি পরাও, তানাহলে বাড়ি পৌছাতে দেরি হয়ে যাবে।

নানা নানির কি হল ওরা কাঁদছে কেনো, মাও তো কাঁদছে। রিনা সব বুঝতে পেরেছে এবার। ওদের মা এবার ওদের কাছে, বিনাকে কোলে নিয়ে কাঁদছে, রিনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ফুলে সাজানো গাড়িতে উঠে পরলো। ওদিকে বিনা  মা মা বলে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে, ওদের নানি এসে বিনাকে নিয়ে গেলো, রিনাও পিছু পিছু গেলো। বিনা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরেছে, রিনার যেনো ঘুম আসছে না, রিনা ভাবছে তাহলে কি আব্বুর মত মাও তাদের ছেড়ে চলে গেলো। খুব কষ্ট করেই রাতটা কেটেছে।

সকাল হতেই রিনা বোনকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিল ও শুনেছে যে, ওদের মা ওদের কাছে আসছে। আজ দুজনেরই কি আনন্দ। বিনা সকাল থেকেই রাস্তার দিকে তাকিয়ে, জানলা দিয়ে বার বার উঁকিঝুকি মারছে, দেখছে আর দিদিকে বলছে কখন আসবে মা, আর কতক্ষন লাগবে মায়ের। ওদের মা যখন এলো, ততক্ষনে বিনা ঘুমিয়ে পরেছে। রিনা বিনাকে উঠিয়ে দিলো, এ কি দেখছে ওরা, ঐ লোকটাওতো এসেছে ওদের মার সঙ্গে। লোকটাতো সব সময় ওদের মার কাছেই থাকছে, ওরা ওদের মার কাছে গেলেই লোকটা বিরক্ত হচ্ছে। ওদের মার সঙ্গে ঝগড়া করছে। আজ বিকেলে ওদের মা চলে যাবে, ওদের নিয়ে যাবে না। ওদের সৎ বাবা ওদের নিতে চাই না। তাই এখন থেকে ওরা নানা নানির কাছেই থাকবে। সব কিছু বুঝতে পেরেছে রিনা। এবার ওদের মা ঐ লোকটার সঙ্গে গাড়িতে গিয়ে বসলো। বিনা ততক্ষনে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। রিনা বিনার কান্না থামালো, জড়িয়ে ধরলো বোনকে, এবার গাড়িটা ছেড়ে দিলো। এখনো দাড়িয়ে ওরা, এখনো দেখছে গাড়িটাকে। আর দেখতে পাচ্ছে না। আস্তে আস্তে গাড়িটা কোথায় মিলিয়ে গেলো ।।