যুব সমাজের অবক্ষয়ের প্রতিকার

Rumman Ansari   2023-04-04   Developer   youth society > যুব সমাজের অবক্ষয়ের প্রতিকার   128 Share

যুব সমাজের অবক্ষয়ের প্রতিকার

আমরা যদি আল্লাহ ও রাসূলের জন্য এবং আল্লাহর কিতাবসমূহ, মুসলিম ইমামগণ ও সাধারণ মানুষের জন্য সত্যিকার হিতাকাংখী হয়ে থাকি, তাহলে যুব সমাজের জন্য এ ধরনের সমস্যার প্রতিকার করা কোন কঠিন বিষয় নয়। কয়েকটি সহজ ও সহনীয় বিষয়গুলো দ্বারা যুব সমাজের সমস্যাগুলোর প্রতিকার করা সম্ভব। নিম্নে আমরা সেগুলো আলোচনা করছি।

প্রথম বিষয়: বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে যে সব শিক্ষা দেয়া হয়, সে সব শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করে তাতে দ্বীনি শিক্ষার প্রচলন করা। সঠিক আকীদার শিক্ষা দেয়া, হারাম হালাল শিক্ষা দেয়া, মানুষের সাথে কীভাবে মুয়ামালা বা লেন-দেন করতে হয় তা শিক্ষা দেয়া। কোন খাদ্যটি হারাম আর কোনটি হালাল তা শিক্ষা ব্যবস্থায় অবশ্যই থাকতে হবে।

মোট কথা, শিক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে একজন মানুষের অন্তর ইলমে নাফে দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং একজন মানুষ পবিত্র বস্তু ও অপবিত্র বস্তুর মধ্যে প্রার্থক করতে সক্ষম হয়। তারা যে সব সমস্যার সম্মুখীন হয়, সে সব সমস্যার সঠিক সমাধান বের করার জন্য তাদের দক্ষ করে ঘড়ে তুলতে হবে। ভালো ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নির্বাচন করা, যারা ছাত্রদের অন্তরে ইলমে নাফের বীজ বপন করবে এবং তাদেরকে উপকারী ইলম হাসিলের প্রতি উৎসাহ দেবে।

দ্বিতীয়: মসজিদ, মাদ্রাসা ইত্যাদির সভা সেমিনারে আলেমদের সাথে যুবকদের সাক্ষাত ও উঠ-বস করা খুবই জরুরী। যুবকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্ন উত্তরের ব্যবস্থা করা, যাতে তাদের সমস্যগুলির সমাধান ও তাদের পথ চলার গতি স্পষ্ট হয়। মনে রাখতে হবে, মুসলিম যুব সমাজকে সংশোধনের ক্ষেত্রে আলেমদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক। কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য বর্তমানে মুসলিম যুব সমাজের মাঝে আর আলেমদের মাঝে বিশাল দূরত্ব ও ফাটল পরিলক্ষিত। অধিকাংশই আমরা দেখতে পাই আলেমরা একদিকে আর যুবকরা তাদের বিপরীত দিকে। এটি যুব সমাজের অবক্ষয় ও পতনের অন্যতম কারণ। যখন যুব-সমাজ আলেমদের সাথে উঠ-বস করত এবং তাদের সাথে সম্পর্ক রাখত, তখন তারা সঠিক পথের উপর ছিল এবং পতন হতে নিরাপদ ছিল। কিন্তু যখন তার আলেম- ওলামাদের থেকে দূরে সরে গেল, তখনই তাদের পতন শুরু হল এবং ধ্বংসের মুখোমুখি হল।

তৃতীয় বিষয়: বর্তমান যুব সমাজকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করা ও নিশ্চিত ধ্বংসের কবল হতে বাঁচানো এবং তাদের অবক্ষয়ের প্রতিকারের জন্য যে বিষয় গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে, তার মধ্যে অন্যতম হল, একেবারে অপারগ হওয়া বা নেহায়েত জরুরত ছাড়া তাদের অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করতে নিষেধ করা, যাতে তারা কাফের ও অমুসলিম দেশে ভ্রমণ করার ক্ষতি হতে নিরাপদ থাকে এবং তাদের কালচার দ্বারা প্রভাবিত হওয়া থেকে মুক্ত থাকে। আর যদি তাদেরকে তাদের ইচ্ছানুযায়ী সফর করতে দেয়া হয়, তখন এটি হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী ও ক্ষতিকর।

উল্লেখিত সিদ্ধান্তগুলো যদি সমাজে বাস্তবায়িত হয়, তবেই যুব সমাজকে নিশ্চিত ধ্বংস ও পতনের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে বলে আমার বিশ্বাস। অর্থাৎ, প্রথমত: শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার তারপর সৎ ও যোগ্য শিক্ষক নির্বাচন। দ্বিতীয়ত: আলেমদের সাথে যুবকদের সু-সম্পর্ক গড়ে তলা এবং তাদের সভা সেমিনার ও দরসে হাজির হয়ে তাদের সাথে উঠ-বস করা। তৃতীয়ত: একেবারে অপারগ হওয়া ও নেহায়েত জরুরত ছাড়া কাফেরদের দেশে ভ্রমণ করা হতে যুবকদের বিরত থাকা। এ ধরনের বিপদ জনক ভ্রমণের জন্য অবশ্যই নিয়ম-কানুন ও আইন থাকতে হবে, যাতে যুবকদের বিপদ থেকে রক্ষা করা যায়। চতুর্থত: প্রচার মাধ্যমগুলোর সংশোধন ও নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে প্রচার মাধ্যমগুলো কেবল তাই প্রচার করে যা মানুষের উপকারে আসে এবং মানুষকে ভালো ও কল্যাণের প্রতি দিক নির্দেশনা দেয়।